মাদকাসক্তির কারণ:

এ পৃথিবীতে মাদকাসক্তির কারণ হিসেবে কোন একটি নির্দিষ্ট কারণকে চিহ্নিত করা যায় না। এর কারণ বহুমুখী। বহু সময় দেখা গিয়েছে পারিবারিক কিংবা পেশাগত জীবনে কলহ, অশান্তি মানুষকে মাদক গ্রহণের পথে ঠেলে দিচ্ছে। কখনো বা দেখা গিয়েছে জীবনে ব্যর্থতার গ্লানি ঢাকতে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে মাদকের। কখনো আবার মাদকাসক্তির কারণ নিতান্তই উৎসাহ।

ছাত্রজীবনে অজানা অনুভূতির প্রতি অদম্য উৎসাহ থেকে বহু যুবক-যুবতী মাদক গ্রহণে প্রবৃত্ত হয়। আবার নানা সময়ে মাদকাসক্ত বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের সংসর্গের কারণেও অনাসক্ত ব্যক্তির মাদকের প্রতি আসক্তি জন্মায়। এইসবের উপরে বিভিন্ন অসাধু চক্রের প্ররোচনা তো রয়েইছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন মাদক চক্র ক্রমাগত নিজেদের ব্যবসায়ীর সমৃদ্ধি এবং আর্থিক লাভের জন্য মানুষকে মাদক গ্রহণে প্ররোচিত করে চলেছে।

ব্যক্তির ওপর মাদকের প্রভাব:

যেকোনো ধরনের মাদক মানুষের শরীর তথা মনের উপর ক্ষণস্থায়ী এবং দীর্ঘকালীন উভয় প্রকারের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। ক্ষণস্থায়ী প্রভাব হিসেবে মাদক গ্রহণের ফলে মস্তিষ্কে ডোপামিন ক্ষরণের মাধ্যমে ব্যক্তি সাময়িক আনন্দ লাভ করতে পারে। তবে ধীরে ধীরে মাদকদ্রব্য যখন কারোর আসক্তি হয়ে দাঁড়ায় তখন তা মানুষের শরীরে নানা ধরনের জটিল সমস্যার উদ্রেক ঘটায়।

এই ধরনের জটিলতা গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হঠাৎ করে রক্তচাপের পরিবর্তন, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, মানসিক অপ্রকৃতিস্থতা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া প্রভৃতি। দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবহারের ফলে মানুষের চোখ মুখেও আসক্তির স্পষ্ট ছাপ পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবহারকারীদের মস্তিষ্কের কোষ গুলিতে ডোপামিনের স্বাভাবিক তথ্য আদান-প্রদানের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।

ফলে আসক্ত ব্যক্তির মস্তিষ্ক স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে ব্যর্থ হয় এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। অন্যদিকে মাদক সরাসরি ব্যক্তির মনকে আক্রমণ করে। এর ফলে তার পারিপার্শ্বিক উপলব্ধির ক্ষমতার হ্রাস পায়। মানুষের চেতনা লুপ্ত হয় এবং স্বাভাবিক চিন্তাভাবনা ব্যাহত হয়।

মাদকাসক্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বেশ কিছু কারণ:

১। মস্তিষ্কে এক বিশেষ ধরনের প্রটিনের পরিমাণ কম থাকা এবং মলিকিউলার মেকানিজমের ফলে মাদকাসক্তি দেখা যায় বলে একটা সমীক্ষায় জানা গেছে।

২। মাদকাসক্তদের মস্তিষ্কে GAT-3 প্রোটিনের পরিমাণ কম থাকায় তারা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

৩। এছাড়াও মাদকাসক্তির বড় কারণ হল মাদকের সহজলভ্যতা, মাদকের প্রতি তরুণ প্রজন্মের কৌতূহল ও নিছক মজা করার প্রবণতা, মাদকের কুফল সম্পর্কে প্রকৃত ধারণার অভাব, মাদক বিষয়ে ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি।

৪। মাদকাসক্তির আরেকটি বড় কারণ হল পরিবার। বাবা-মায়ের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি।

৫। এছাড়াও রয়েছে বন্ধুদের চাপ, পারিপার্শ্বিক কারণ, ব্যার্থতা। এমনকি মাদক নিয়ে স্মার্ট হওয়ার প্রবণতাও অনেককে ঠেলে দেয় মাদকের জগতে।

মাদকাসক্তির প্রতিকার:

মাদকাসক্তির প্রতিকার করতে হলে একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে, দীর্ঘদিন চিকিৎসা সেবা নেবার পর মাদকাসক্তির প্রতিকার করা সম্ভব। চিকিৎসা নিতে হলে অবশ্যই একটি ভালোমানের চিকিৎসাকেন্দ্রে থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে।

মাদক সুধু শারীরিক দিক থেকে খতি করেনা মাদক সেবনের কারনে মানসিক ক্ষতি ও হয়ে থাকে যার থেকে বের হয়ে আসতে হলে দীর্ঘদিন চিকিৎসা সেবা নেবার প্রয়োজন হয়।

তাছারা মাদকাসক্তির প্রতিকার আন্দোলনে বাংলাদেশের ভূমিকা দিন দিন তরান্বিত হচ্ছে। আধুনিক (আমরা ধূমপান নিবারণ করি) সংস্থাটি মাদক নিরাময় আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

01716623665

www.goldenlifebd.com

Posted in Uncategorized.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *