Rehab Center in Dhaka

এডিএইচডি (ADHD) কারণ ও লক্ষণ

এডিএইচডি (ADHD) কারণ ও লক্ষণ

এডিএইচডি (ADHD) বা অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার একটি স্নায়ুবিক সমস্যা যা শিশুদের মাঝে বেশি দেখা যায়। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে শিশু মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না, অতিরিক্ত সক্রিয় থাকে এবং আচরণে নিয়ন্ত্রণ হারায়। এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব ADHD কি, এর কারণ, লক্ষণ, প্রকারভেদ, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং এর সাথে মানিয়ে চলার কৌশল সম্পর্কে।

ADHD কি?

ADHD হল একটি নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার যা সাধারণত শিশুর স্কুল-জীবনে প্রকাশ পায়। এটি মূলত মনোযোগের ঘাটতি, অতিরিক্ত সক্রিয়তা এবং হঠাৎ প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের মাধ্যমে চিহ্নিত করা যায়।

রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665

ADHD লক্ষণ

ADHD-এর লক্ষণগুলো সাধারণত তিনটি মূল শ্রেণিতে ভাগ করা হয়:

  • অমনোযোগ (Inattention) 
  • অতিরিক্ত চঞ্চলতা বা হাইপার‌অ্যাকটিভিটি (Hyperactivity) 
  • হঠাৎ প্রতিক্রিয়া বা ইমপালসিভনেস (Impulsivity) 

নিচে প্রতিটি উপসর্গ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:

অমনোযোগের লক্ষণ (Symptoms of Inattention)

এই লক্ষণগুলো সাধারণত শিশুর পড়াশোনা, পারিবারিক বা সামাজিক জীবনকে প্রভাবিত করে। শিশু মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, কাজ অসম্পূর্ণ রেখে দেয় এবং ছোট ছোট বিষয়েও ভুল করে।

ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা

শিশুরা শিক্ষক যা বলছেন, তা পুরোপুরি শুনে বুঝে নিতে পারে না। প্রায়ই ক্লাসে মনোযোগ হারিয়ে ফেলে, অন্যদিকে তাকায় বা নিজের কল্পনার জগতে চলে যায়।

সহজে বিভ্রান্ত হওয়া

বাইরের অল্প শব্দ, অন্যের কথাবার্তা বা কোনো দৃশ্যেই সহজে মনোযোগ চলে যায়। পড়াশোনায় বা কোনো কাজ করতে বসলে ঘন ঘন বিরতি নেয়।

নির্দেশনা অনুসরণে ব্যর্থ হওয়া

শিশুকে একাধিক ধাপে কোনো কাজ দিলে সে প্রায়ই মাঝপথে ভুলে যায় বা নির্দেশ বুঝতে না পেরে ভুল কাজ করে ফেলে। যেমন—“জুতা পরে ব্যাগ নাও এবং বের হও”—এই ধরনের নির্দেশে শিশুটি হয়তো শুধু জুতা পরে বসে থাকবে।

পড়াশোনায় ভুল করা

অনেক সময় খুব সহজ প্রশ্নের উত্তরেও ভুল করে। প্রশ্নটি না পড়েই উত্তর দেওয়া বা উত্তর অপূর্ণ রেখে দেওয়া সাধারণ বিষয়।

জিনিস হারিয়ে ফেলা

পেন্সিল, খাতা, খেলনা ইত্যাদি প্রায়ই খুঁজে না পাওয়া বা হারিয়ে ফেলার ঘটনা ঘটে। প্রায়ই বলে—“আমার জিনিসটা কোথায় রাখছি মনে পড়ছে না।”

Hyperactivity এবং Impulsivity এর লক্ষণ

এই ধরনের লক্ষণগুলোতে শিশু অতিরিক্ত চঞ্চল ও অস্থির আচরণ করে, যা সাধারণত নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়। অনেক সময় সামাজিক বা শিক্ষার পরিবেশে সমস্যার সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত দৌড়াদৌড়ি বা লাফালাফি করা

শিশু যখন শান্ত থাকার কথা, তখনও সে ঘরের ভিতর বা ক্লাসে লাফালাফি করে। বাজারে বা মসজিদে গিয়ে হঠাৎ ছুটোছুটি করা এসব লক্ষণের মধ্যে পড়ে।

এক জায়গায় বসে থাকতে না পারা

স্কুলে বা বাসায় পড়তে বসালে কয়েক মিনিটের মধ্যে উঠে পড়ে বা চেয়ারে বসে দুলতে থাকে। নিজের অজান্তেই হাত-পা নাড়তে থাকে বা বসে বসে শব্দ করে।

প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই উত্তর দেওয়া

শিক্ষক বা অভিভাবক যখন কোনো প্রশ্ন করছেন, তখন সম্পূর্ণ প্রশ্ন না শুনেই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে। এটি তাদের ধৈর্যহীনতা ও প্রতিক্রিয়াশীল স্বভাবের ইঙ্গিত।

লাইন ভেঙে যাওয়া বা অন্যের কাজ বাধা দেওয়া

স্কুলে খেলাধুলা বা খাবারের লাইনে না দাঁড়িয়ে হঠাৎ সামনে চলে যায়। অন্য শিশুদের কথার মাঝে ঢুকে পড়ে বা তাদের খেলায় হস্তক্ষেপ করে।

শিশুদের মধ্যে ADHD

ADHD সাধারণত শিশুর ৩ থেকে ৬ বছর বয়সের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। এই সময়কালেই শিশুরা পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হতে শুরু করে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক অভ্যাস গড়ে ওঠে। ADHD আক্রান্ত শিশুরা অন্য শিশুদের তুলনায় মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না, অতিরিক্ত চঞ্চল থাকে এবং আচরণে অস্থিরতা দেখা যায়।

এডিএইচডি (ADHD) কারণ ও লক্ষণ
এডিএইচডি (ADHD) কারণ ও লক্ষণ

ADHD কারণ

জেনেটিক বা বংশগত কারণ

ADHD-এর সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রধান কারণ হল বংশগত প্রভাব। গবেষণায় দেখা গেছে, ADHD আক্রান্ত শিশুদের বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও ADHD-এর ইতিহাস থাকতে পারে। যদি এক পরিবারের একজন সদস্য ADHD তে ভোগেন, তাহলে অন্য সদস্যদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৭০-৮০% পর্যন্ত বেড়ে যায়। এজন্য একে “জেনেটিকালি ইনফ্লুয়েন্সড ডিজঅর্ডার” বলা হয়।

গর্ভাবস্থায় মাতার ধূমপান বা মাদক গ্রহণ

একটি শিশুর মস্তিষ্ক গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিকশিত হয়। এই সময়ে যদি গর্ভবতী মা ধূমপান করেন, অ্যালকোহল পান করেন বা নিষিদ্ধ মাদক গ্রহণ করেন, তাহলে তা ভ্রূণের স্নায়ুতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ধরনের প্রভাব শিশুর ভবিষ্যতে ADHD-র উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে।

জন্মের সময় কম ওজন হওয়া

যেসব শিশু জন্মের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম ওজনে জন্ম নেয় (Low Birth Weight), তাদের মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ বিকাশে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এতে স্নায়বিক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এবং পরবর্তীতে ADHD-এর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, অপরিণত গর্ভধারণ (Premature Birth) ADHD ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

মস্তিষ্কের কিছু অংশের কার্যকলাপে ব্যতিক্রম

ADHD আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্ক স্ক্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাদের ব্রেইনের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলের (যেমন: prefrontal cortex, basal ganglia এবং cerebellum) কার্যক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় কম। এই অঞ্চলগুলো মনোযোগ নিয়ন্ত্রণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই স্নায়বিক ব্যতিক্রম ADHD উপসর্গ সৃষ্টি করে।

ADHD কাকে প্রভাবিত করে?

শিশুদের মধ্যে প্রধানত দেখা যায়

ADHD মূলত শিশুদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় এবং সাধারণত ৩-৬ বছর বয়সে এর উপসর্গ প্রথম প্রকাশ পায়। শিশুরা যখন স্কুলে যেতে শুরু করে, তখন তাদের আচরণগত পরিবর্তনগুলো আরও স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। এই বয়সে মনোযোগের ঘাটতি, অতিরিক্ত চঞ্চলতা ও নিয়ন্ত্রণহীন প্রতিক্রিয়া খুব চোখে পড়ে।

স্কুল পড়ুয়া শিশুদের মধ্যে বেশি লক্ষণ দেখা যায়

স্কুলে পড়াশোনা এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার সময় ADHD-এর লক্ষণগুলো আরও প্রকট হয়ে ওঠে। শিক্ষক ও সহপাঠীরা প্রথম এই লক্ষণগুলো লক্ষ্য করেন—যেমন: ক্লাসে মনোযোগ না রাখা, কাজ শেষ না করা, কথা বলার সময়ে বাধা দেওয়া, বা নিয়ম না মানা। এই কারণেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর অনেক শিশুর ADHD নির্ণয় হয়।

প্রাপ্তবয়স্করাও এ সমস্যায় ভুগতে পারেন

যদিও ADHD প্রধানত শিশুদের সমস্যা, তবে এটি অনেক সময় প্রাপ্তবয়স্ক বয়সেও থেকে যায়। অনেক সময় ছোটবেলায় ADHD নির্ণয় না হলে এবং যথাযথ চিকিৎসা না হলে উপসর্গগুলো বড় হওয়ার পরও থেকে যেতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ADHD নানা ভাবে প্রকাশ পায়, যেমন: সময় ব্যবস্থাপনায় সমস্যা, দ্রুত বিরক্ত হয়ে যাওয়া, সিদ্ধান্তহীনতা, সম্পর্কের সমস্যা এবং পেশাগত জীবনে মনোযোগের ঘাটতি।

ADHD এর প্রকারভেদ

হালকা ADHD (Mild ADHD)

লক্ষণসমূহ:

  • অল্প সংখ্যক উপসর্গ দেখা যায় (৬টির নিচে)। 
  • শিশুরা মাঝে মাঝে মনোযোগ হারায়, কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য। 
  • অতিরিক্ত চঞ্চলতা খুব বেশি প্রকাশ পায় না। 
  • সামাজিক বা একাডেমিক জীবনে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি করে না। 

প্রভাব:

  • শিক্ষাজীবনে সামান্য ব্যাঘাত ঘটে। 
  • পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক সাধারণত স্থিতিশীল থাকে। 
  • অনেক সময় এই প্রকার ADHD শিশুদের আচরণগত বৈচিত্র্য হিসেবে বিবেচিত হয়, রোগ হিসেবে নয়। 

করণীয়:

  • নিয়মিত রুটিন, প্যারেন্টিং গাইডলাইন অনুসরণ ও শিক্ষকের সহযোগিতা থাকলে ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। 
  • হালকা আচরণগত থেরাপি ভালো ফলাফল দেয়। 

মাঝারি ADHD (Moderate ADHD)

লক্ষণসমূহ:

  • লক্ষণগুলো আরও স্পষ্ট ও ঘন ঘন প্রকাশ পায়। 
  • একসাথে একাধিক কাজ করতে না পারা, নির্দেশনা অনুসরণে অসুবিধা হয়। 
  • Hyperactivity মাঝে মাঝেই চোখে পড়ে। 

প্রভাব:

  • একাডেমিক পারফরমেন্সে সমস্যা দেখা দেয়। 
  • বন্ধুদের সঙ্গে মনোমালিন্য বা সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। 
  • আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। 

করণীয়:

  • ওষুধের পাশাপাশি কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT) প্রয়োজন হতে পারে। 
  • শিক্ষক ও অভিভাবকের বিশেষ পর্যবেক্ষণ এবং সমন্বিত সহায়তা জরুরি। 

তীব্র ADHD (Severe ADHD)

লক্ষণসমূহ:

  • অসংখ্য উপসর্গ একত্রে ও প্রায় প্রতিদিন দেখা যায়। 
  • অতিরিক্ত চঞ্চলতা, ধৈর্যহীনতা, এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা প্রকট। 
  • একবারে কয়েক মিনিটও মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন। 

প্রভাব:

  • পড়াশোনা, পারিবারিক জীবন এবং সামাজিক সম্পর্ক মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়। 
  • শিশুটি প্রায়ই শৃঙ্খলাভঙ্গ করে, নিয়ম মানতে কষ্ট হয়। 
  • আত্মসম্মানবোধ কমে যায় এবং বিষণ্নতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। 

করণীয়:

  • দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন, ওষুধ এবং থেরাপি একসাথে দিতে হয়। 
  • স্কুলে বিশেষ সহায়তা ব্যবস্থা ও একটি স্থিতিশীল রুটিন গুরুত্বপূর্ণ। 
  • পরিবারকেও পরামর্শ নেওয়া উচিত, যেন তারা শিশুকে মানসিকভাবে সাহায্য করতে পারে।

 

ADHD রোগ নির্ণয়

রোগ নির্ণয়ের জন্য শিশুর আচরণ অন্তত ৬ মাস ধরে নিরীক্ষণ করা হয়। সাধারণত শিক্ষক ও অভিভাবকের পর্যবেক্ষণ এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মূল্যায়নের মাধ্যমে ADHD চিহ্নিত করা হয়।

ADHD চিকিৎসা

ঔষধ নির্ভর চিকিৎসা

স্টিমুল্যান্ট ওষুধ

স্টিমুল্যান্ট ওষুধ ADHD চিকিৎসায় সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। এগুলো স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং অতিরিক্ত চঞ্চলতা কমাতে সাহায্য করে।

উদাহরণ:

  • Methylphenidate (Ritalin)
  • Amphetamine (Adderall)

উপকারিতা:

  • মনোযোগ বৃদ্ধি
  • হাইপারঅ্যাকটিভিটি হ্রাস
  • আচরণে উন্নতি

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

  • ঘুমের সমস্যা
  • ক্ষুধামান্দ্য
  • মাথাব্যথা
  • মেজাজের পরিবর্তন

নন-স্টিমুল্যান্ট ওষুধ

যেসব শিশু স্টিমুল্যান্ট ওষুধে সাড়া দেয় না বা যাদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তাদের জন্য নন-স্টিমুল্যান্ট ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণ:

  • Atomoxetine (Strattera)
  • Guanfacine

উপকারিতা:

  • ধীরে ধীরে কাজ করে
  • হাইপারঅ্যাকটিভিটি কমায়
  • রেগুলার ব্যবহারে উপসর্গ হ্রাস পায়

আচরণগত থেরাপি

ঔষধের পাশাপাশি আচরণগত থেরাপিও ADHD ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ। এতে শিশুর আচরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা হয় এবং প্যারেন্টিং গাইডলাইন প্রদান করা হয়।

প্যারেন্টিং ট্রেনিং

  • অভিভাবকদের শেখানো হয় কীভাবে সন্তানের আচরণকে ইতিবাচকভাবে পরিচালনা করতে হয়
  • ইতিবাচক পুরস্কার পদ্ধতি
  • নেতিবাচক আচরণের প্রতিক্রিয়া কৌশল

স্কুলে বিশেষ সহায়তা

  • ক্লাসরুমে অতিরিক্ত মনোযোগ
  • বিশেষ শিক্ষক বা সহায়তা কর্মী
  • সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা
  • বাড়তি সময়ের সুযোগ

কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT)

CBT ADHD-এর আচরণগত এবং আবেগগত সমস্যার সমাধানে কার্যকর। এতে শিশু শেখে কীভাবে নিজের আচরণ ও চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

CBT-এর উপকারিতা:

  • আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি
  • আবেগ নিয়ন্ত্রণ
  • আচরণগত সচেতনতা
  • সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন

জীবনধারা পরিবর্তন ও সহায়ক উপায়

  • পর্যাপ্ত ঘুম
  • পুষ্টিকর খাদ্য
  • নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম
  • ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা
  • মেডিটেশন ও রিলাক্সেশন

ADHD চিকিত্সার সেরা বিকল্পগুলি কী কী?

  • একত্রিত থেরাপি (ঔষধ + থেরাপি)
  • পরিবেশগত সমর্থন (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাসায়)
  • দৈনন্দিন রুটিন গঠন করা
  • সঠিক ঘুম ও পুষ্টি নিশ্চিত করা

ADHD এর জটিলতাগুলো কি কি?

  • পড়াশোনার সমস্যা
  • আত্মবিশ্বাসের অভাব
  • সামাজিক বিচ্ছিন্নতা
  • মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা (উদ্বেগ, বিষণ্ণতা)

ADHD এর সাথে মোকাবিলা করার কৌশল

সময় ব্যবস্থাপনা

  • সময়সূচী তৈরি করে চলা
  • গুরুত্বপূর্ণ কাজের তালিকা তৈরি

মনোযোগ বৃদ্ধির কৌশল

  • ছোট ছোট কাজ ভাগ করে করা
  • বিরতি নিয়ে কাজ করা

পরিবার ও স্কুলের সহায়তা

  • শিক্ষক ও অভিভাবকের সমন্বিত প্রচেষ্টা
  • ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা

কেন Golden Life BD সেরা ADHD গাইডলাইন প্রদানকারী?

Golden Life BD আপনাকে সঠিক, নির্ভরযোগ্য ও সহজভাবে উপস্থাপিত তথ্য প্রদান করে ADHD সম্পর্কে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে—আপনার শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া এবং সমাজে একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা। আমাদের ব্লগগুলো গবেষণালব্ধ, ব্যাখ্যামূলক ও পাঠক-বান্ধব। অন্যান্য ওয়েবসাইট যেখানে তথ্য টুকরো টুকরোভাবে দেওয়া হয়, Golden Life BD সেখানে তথ্য উপস্থাপন করে গভীরতা ও প্রাসঙ্গিকতার সাথে।

রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665

উপসংহার: এডিএইচডি (ADHD) কারণ ও লক্ষণ

ADHD একটি দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা হলেও সঠিকভাবে মোকাবিলা করলে শিশুদের স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। আপনার শিশুর আচরণে উপরের উপসর্গগুলো যদি দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসা গ্রহণ করুন। ADHD সম্পর্কে সচেতনতা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে Golden Life BD আপনার পাশে রয়েছে।

 

প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন (FAQs)- এডিএইচডি (ADHD) কারণ ও লক্ষণ

ADHD কি এবং এটি কাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়?

ADHD বা অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার হলো একটি নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার যা মূলত শিশুদের মধ্যে শুরু হয়, তবে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও থাকতে পারে। এতে ব্যক্তি অমনোযোগী, অতিরিক্ত সক্রিয় এবং অস্থির আচরণ প্রদর্শন করে।

ADHD এর মূল কারণ কী?

ADHD-এর সুনির্দিষ্ট কারণ একক নয়, তবে সাধারণত এটি জেনেটিক (বংশগত), মস্তিষ্কের গঠন ও রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা, গর্ভকালীন সমস্যাবলী এবং পরিবেশগত প্রভাবের ফলে হতে পারে। পরিবারে ADHD ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ADHD এর প্রধান লক্ষণ কী কী?

ADHD-এর তিনটি প্রধান লক্ষণ হল:

  • অমনোযোগ (inattention): মনোযোগ ধরে রাখতে অসুবিধা, ভুলে যাওয়া, কাজ অসম্পূর্ণ রাখা। 
  • অতিসক্রিয়তা (hyperactivity): অতিরিক্ত চলাফেরা, হাত-পা নাড়ানো, শান্তভাবে বসে থাকতে না পারা। 
  • ইম্পালসিভিটি (impulsivity): না ভেবে কাজ করা, প্রশ্ন শেষ না হওয়া পর্যন্ত উত্তর দেওয়া, অন্যের কথা কাটা। 

শিশুদের মধ্যে ADHD এর লক্ষণ কেমন হয়?

শিশুদের মধ্যে ADHD সাধারণত স্কুলে মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা, এক জায়গায় বসে থাকতে না পারা, নিয়মিত ভুলে যাওয়া, অতিরিক্ত দৌড়াদৌড়ি এবং আচরণগত সমস্যা হিসেবে দেখা যায়। তারা প্রায়ই নিয়ম মানতে বা কাজের প্রতি মনোযোগ দিতে পারে না।

ADHD কীভাবে নির্ণয় করা হয়?

ADHD নির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ মনোরোগ চিকিৎসক বা শিশু মনোবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন আচরণ পর্যবেক্ষণ, প্রশ্নমালা এবং শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে থাকেন। নির্দিষ্ট কোনো রক্ত পরীক্ষা বা স্ক্যানের মাধ্যমে ADHD নির্ণয় সম্ভব নয়।

ADHD এর চিকিৎসা কী কী হতে পারে?

ADHD-এর চিকিৎসায় সাধারণত তিনটি ধাপ নেওয়া হয়:

  • ওষুধ (যেমন: স্টিমুলান্ট মেডিকেশন) 
  • বিহেভিয়ারাল থেরাপি 
  • পরিবার ও স্কুলের সহযোগিতায় পরিবেশগত সমর্থন
    প্রয়োজনে কাউন্সেলিং ও শিক্ষামূলক সহায়তা প্রদান করা হয়। 

ADHD আক্রান্তদের জন্য দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে সাহায্য করা যায়?

ADHD আক্রান্তদের জন্য নিয়মিত রুটিন তৈরি, কাজ ছোট ছোট অংশে ভাগ করে দেওয়া, ইতিবাচক প্রশংসা, অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা থেকে দূরে রাখা এবং ধৈর্যসহকারে আচরণ করা অত্যন্ত কার্যকর। পরিবারের সহানুভূতি ও সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

Scroll to Top